প্রতিবেদন: ঘূর্ণিঝড় ‘ সিডর ’ - এ বিপর্যস্ত এলাকার ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যক্রম

এলাকার ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যক্রম

আলোচ্য বিষয়:
👉🏻ঘূর্ণিঝড় ‘ সিডর ’ - এ বিপর্যস্ত কোনো একটি এলাকার ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যক্রমের একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।
প্রতিবেদন: ঘূর্ণিঝড় ‘ সিডর ’ - এ বিপর্যস্ত  এলাকার ত্রাণ পুনর্বাসন কার্যক্রম

মোরেলগঞ্জে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়ের অভাব : সিডর - দুর্গত মানুষের দুর্ভোগ চরমে

মোরেলগঞ্জ ( বাগেরহাট ) প্রতিনিধি : সিডর আঘাত হানার এক সপ্তাহ পরও মোরেলগঞ্জে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতা লক্ষ করা যাচ্ছে ফলে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী থাকার পরও অনেক দুর্গত এলাকায় একবিন্দু ত্রাণও পৌঁছে নি । তার বিপরীতে অনেক এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে । সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে , ত্রাণ বিতরণ নিয়ে এক বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে । উপজেলা সদর থেকে পায়ে হেঁটে পৌছা যায় এমন এলাকায় সরকারি , বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রচুর ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে । কিন্তু দূরবর্তী ও দুর্গম চরাঞ্চলের দিকে কারও নজর নেই । গতকাল উপজেলার দক্ষিণে উপকূলবর্তী কাজির হাট , শেখের ভিটা , চর মাতাব্বর প্রভৃতি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মানুষ সম্পূর্ণরূপে খোলা আকাশের নিচে বাস করছে । কারো কাছে কোনো খাবার নেই , নেই পানীয়জল । পুকুর ও ডোবাগুলো লবণাক্ত পানিতে পূর্ণ হয়ে আছে । তাতে ভাসছে মানুষের গলিত লাশ ও পশু - পাখির মৃতদেহ । এসব গ্রামে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে ত্রাণসামগ্রী ফেলা হলেও তা কতিপয় লোকের হাতে কুক্ষিগত হয়েছে । গতকাল আড়িখাল নামক একটি খরস্রোতা খালে আকাশ থেকে ফেলা ত্রাণসামগ্রী পড়লে অসংখ্য মানুষ পানিতে নেমে কাড়াকাড়ি শুরু করে । এতে পানিতে ভেসে যায় রতন ( ১৫ ) ও মকবুল ( ২৬ ) নামক দু’জন । পরে তাদের লাশ উদ্ধার করে গ্রামবাসী । এতে নতুন করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে ।

এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও যৌথবাহিনী কমান্ডারের সাথে কথা বললে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকাণ্ডে সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করা হয় । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব ফজলুল বারী জানান , ইতোমধ্যে ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ ও বিতরণের জন্য সর্বমহলের সমন্বয়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে । এখন থেকে কোনো সংগঠন ও ব্যক্তিকে নিজেদের হাতে আর ত্রাণ বিতরণ করতে দেওয়া হবে না । কেন্দ্রীয়ভাবে সকল ত্রাণ গ্রহণ করা হচ্ছে এবং অগ্রাধিকার ও চাহিদার ভিত্তিতে প্রশাসনের মাধ্যমে সর্বত্র ত্রাণ বিতরণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে । সেনাবাহিনী এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে । তিনি জানান , সবাই সহজে পৌঁছে যায় এমন স্থানেই ত্রাণ নিয়ে যায় । ফলে কিছু এলাকার ত্রাণের প্রবাহ বেশি ।

গতকাল উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সামিয়ানা খাটিয়ে ত্রাণ গ্রহণ করে সেনাবাহিনী । সরকারের ত্রাণবাহী বাসগুলোও এসে পৌঁছেছে । তাই ত্রাণের অভাব দৃশ্যত নেই । সেনাবাহিনীর ভাট , উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ টি ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের হার্ট মেডিক্যাল টিম দুর্গম চরাঞ্চলগুলোতে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কাজ শুরু করেছে । পর্যাপ্ত তাঁবু , ঢেউটিন ও বিশুদ্ধ পানিও মজুদ রয়েছে । দু'একদিনের মধ্যেই ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে অসুবিধা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে এবং সব দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে যাবে । এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবার প্রতি ৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে । ঘর তোলার জন্যও প্রতি পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা দেওয়ার নির্দেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এসেছে বলে জানা গেছে ।


আরো পড়ুন: