রসায়নের ধারনা
বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার মধ্যে রসায়ন অন্যতম। রসায়নে নানা ধরনের পরিবর্তন যেমন সৃষ্টি ধ্বংস, বৃদ্ধি রূপান্তর, উৎপাদন ইত্যাদির আলোচনা করা হয়। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় রসায়ন চর্চা আল-কেমি নামে পরিচিত। 'আল কেমি' শব্দটি আরবি 'আল কিমিয়া' থেকে উদ্ভূত, যা দিয়ে মিসরীয় সভ্যতাকে বুঝানো হতো। রসায়নের সাথে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখা যেমন-গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব বিজ্ঞান ইত্যাদির বিশেষ যোগসূত্র রয়েছে। রসায়নের পরিধি ব্যাপক, যা মানুষের সেবায় নিয়োজিত। রসায়নের চর্চাও সময়ের সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোট কথা, আমাদের জীবনধারণের প্রতিটি বিষয়ের সাথে রসায়ন কোনো না কোনোভাবে জড়িত। এজন্য রসায়নকে জীবনের জন্য বিজ্ঞান বলা হয়।
এক নজরে বিভিন্ন যৌগের রাসায়নিক নাম ও সংকেত
এ অধ্যায়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উল্লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি উপযোগী যৌগসমূহের নাম ও সংকেত নিচে প্রদত্ত হলো-
যৌগের রাসায়নিক নাম | সংকেত |
---|---|
মরিচা | Fe2O3.nH2O/Fe2O3.3H2O |
ব্রোঞ্জ | Cu31Sn8 |
স্যালিসাইলিক এসিড | C7H6O3 |
ম্যালিক এসিড | C4H6O5 |
গ্লুকোজ | C6H12O6 |
ফ্রুক্টোজ | C6H12O6 |
কেরোসিন | C12H26 |
প্রাকৃতিক গ্যাস | CH4 |
এন্টাসিড | [Al(OH)3 + Mg(OH)2] |
অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রক্সাইড | Al(OH)3 |
ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড | Mg(OH)2 |
ইউরিয়া (রাসায়নিক সার) | (NH2)2CO |
টিএসপি (রাসায়নিক সার) | Ca(H2PO4)2 |
সেলুলোজ | (C6H10O5)n |
কার্বন ডাইঅক্সাইড (পরিবেশ দূষক) | CO2 |
কার্বন মনোক্সাইড (পরিবেশ দূষক) | CO |
ভারি ধাতু | Hg, Pb, As, Co |
অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড | NH4Cl |
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
মরিচা: আয়রন বাতাসের অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে যে আর্দ্র ফেরিক অক্সাইড (Fe2O3nH₂O) উৎপন্ন করে তাকে মরিচা বলে।
সংকর ধাতু: গলিত অবস্থায় একাধিক ধাতুকে মিশ্রিত করে যে বস্তু বা ধাতু তৈরি করা হয় তাকে সংকর ধাতু (alloy) বলা হয়। যেমন, কপার ও টিন ধাতুকে গলিয়ে তরলে পরিণত করে এবং এ ২টি তরলকে একত্রে মিশিয়ে অতঃপর মিশ্রণকে ঠাণ্ডা করে কঠিন সংকর ধাতুতে পরিণত করা হয়, এ সংকর ধাতুর নাম ব্রোঞ্জ।
ব্রোঞ্জ: কপার (Cu) ও টিনের (Sn) গলনে সৃষ্ট সংকর ধাতুই হলো ব্রোঞ্জ।
রসায়ন: বিজ্ঞানের যে শাখায় মৌল বা মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত যৌগ বা যৌগিক পদার্থের সংযুক্তি, গঠন, প্রকৃতি, ধর্ম, ব্যবহার ইত্যাদি এবং বস্তুসমূহের পারস্পরিক রূপান্তর ও রূপান্তরকালে শক্তি মূলত তাপশক্তির শোষণ ও নিঃসরণ আলোচনা করা হয় তা হচ্ছে রসায়ন।
আলকেমি: মধ্যযুগীয় আরবের রসায়ন চর্চাকে আলকেমি (Alchemy) বলা হয়।
এন্টাসিড: এন্টাসিড হলো Mg(OH)₂ ও Al(OH)3, এর মিশ্রণ, যা পেটের এসিডিটির জন্য ওষুধ হিসেবে খাওয়া হয়।
প্রিজারভেটিভস্: যেসব রাসায়নিক পদার্থের পরিমিত ব্যবহার করে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায় তাদের প্রিজারভেটিভস্ (preservatives) বলে।
ভারী ধাতু: যে সকল ধাতুর ঘনত্ব, পারমাণবিক ভর অথবা পারমাণবিক সংখ্যা অনেক বেশি তাদেরকে ভারী ধাতু বলে। যেমন, পারদ (Hg), লেড (Pb), আর্সেনিক (As), কোবাল্ট (Co) ইত্যাদি। এগুলো পানির সাথে মিশে পানি দূষণ এবং অন্যান্য উপায়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে।
গবেষণা: পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পদ্ধতিগতভাবে কোনো কিছু জানার চেষ্টাই হচ্ছে গবেষণা।
গবেষণাগার: যেখানে বিজ্ঞানের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা করা হয় তাকে পরীক্ষাগার বা গবেষণাগার (Laboratory) বলে।
অ্যাপ্রোন: গবেষণাগারে শরীরকে রক্ষা করতে এক ধরনের নিরাপদ পোশাক পড়তে হয়, যাকে অ্যাপ্রোন (apron) বলা হয়। এটির হাতা হয় হাতের কবজি পর্যন্ত ও লম্বায় হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। অ্যাপ্রোন সূতি কাপড়ের এবং সাদা রঙের হয়।
বিস্ফোরক পদার্থ: যেসব পদার্থে আঘাত লাগলে বা আগুন লাগলে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হতে পারে, যার জন্য শরীরের এবং গবেষণাগারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে, তাদেরকে বিস্ফোরক পদার্থ বলা হয়। যেমন টিনটি, জৈব পারঅক্সাইড ইত্যাদি।
দাহ্য পদার্থ: যেসব পদার্থে দ্রুত আগুন ধরে যেতে পারে তাদেরকে দাহ্য পদার্থ বলে। যেমন অ্যালকোহল, ইথার ইত্যাদি।
বিষাক্ত পদার্থ: যেসব পদার্থ শরীরে লাগলে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে শরীরের নানা ধরনের ক্ষতি হয় তাকে বিষাক্ত পদার্থ বলে। যেমন, বেনজিন, ক্লোরোবেনজিন, মিথানল এ ধরনের পদার্থ।
তেজস্ক্রিয় পদার্থ: যেসব পদার্থ থেকে ক্ষতিকারক রশ্মি বের হয়, যা ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে বা একজনকে বিকলাঙ্গ করে দিতে পারে তাকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বলে। যেমন, ইউরেনিয়াম, রেডিয়াম ইত্যাদি তেজস্ক্রিয় পদার্থ।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন
১। বিজ্ঞান কী?
বিজ্ঞান হলো, মানবজাতির পদ্ধতিগত, নিয়মানুগ ধারাবাহিক প্রচেষ্টা যার দ্বারা প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে নিজেদের কল্যাণে কাজে লাগানো হয়।
২। রসায়ন কী?
বিজ্ঞানের যে শাখায় মৌল বা মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত যৌগ বা যৌগিক পদার্থের সংযুক্তি, গঠন প্রকৃতি, ধর্ম, ব্যবহার ইত্যাদি এবং বস্তুসমূহের পারস্পরিক রূপান্তর ও রূপান্তরকালে শক্তি মূলত তাপ শক্তির শোষণ ও নিঃসরণ আলোচনা করা হয় তাকে রসায়ন বলে।
৩। রসায়ন কাকে বলে?
বিজ্ঞানের যে শাখায় পদার্থের গঠন, ধর্ম এবং পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে রসায়ন বলে।
৪। এন্টাসিড কি?
এন্টাসিড হলো Mg(OH)₂ ও Al(OH), এর মিশ্রণ, যা পেটের এসিডিটির জন্য ওষুধ হিসেবে খাওয়া হয়।
৫। আলকেমি কী?
মধ্যযুগীয় আরবের রসায়ন চর্চাকে আলকেমি (Alchemy) বলা হয়।
৬। ব্রোঞ্জ কী?
কপার (Cu) ও টিনের (Sn) গলনে সৃষ্ট সংকর ধাতুই হলো ব্রোঞ্জ
৭। সংকর ধাতু কাকে বলে?
গলিত অবস্থায় একাধিক ধাতুকে মিশ্রিত করে যে বস্তু বা ধাতু তৈরি করা হয় তাকে সংকর ধাতু (alloy) বলা হয়।
৮। কোয়ান্টাম মেকানিক্স কী?
কোয়ান্টাম মেকানিক্স হলো বিজ্ঞানের সেই শাখা যেখানে গাণিতিক হিসাব-নিকাশের সাহায্যে পরমাণুর গঠন ব্যাখ্যা করে।
৯। ভারী ধাতু কাকে বলে?
যে সকল ধাতুর ঘনত্ব, পারমাণবিক ভর অথবা পারমাণবিক সংখ্যা অনেক বেশি তাদেরকে ভারী ধাতু বলে।
১০। প্রিজারভেটিভস্ কী?
যেসব রাসায়নিক পদার্থের পরিমিত ব্যবহার করে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায় তাদের প্রিজারভেটিভস্ বলে।
১১। ফুড প্রিজারভেটিভস্ কী?
যেসব রাসায়নিক পদার্থের পরিমিত ব্যবহার করে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী করে দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা যায় তাদের ফুড প্রিজারভেটিভস্ বলে।
১২। প্রিজারভেটিভস্ কী কাজে ব্যবহার করা হয়?
প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বিশেষ করে জুস, সস, কেক, বিস্কুট প্রভৃতিতে বেশি সময় ধরে সংরক্ষণের জন্য প্রিজারভেটিভস্ ব্যবহার করা হয়।
১৩। গবেষণা কী?
পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পদ্ধতিগতভাবে কোনো কিছু জানার চেষ্টাই হচ্ছে গবেষণা।
১৪। গবেষণাগার কী?
যেখানে বিজ্ঞানের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা করা হয় তাকে পরীক্ষাগার বা গবেষণাগার (Laboratory) বলে।
১৫। ট্রিফয়েল কী?
আন্তর্জাতিক তেজস্ক্রিয় রশ্মি চিহ্নকে ট্রিফয়েল বলে।
১৬। বিস্ফোরক পদার্থ কাকে বলে?
যেসব পদার্থে আঘাত লাগলে বা আগুন লাগলে প্রচন্ড বিস্ফোরণ হতে পারে, যার জন্য শরীরের এবং গবেষণাগারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে, তাদেরকে বিস্ফোরক পদার্থ বলা হয়।
১৮। দাহ্য পদার্থ কাকে বলে?
যেসব পদার্থে দ্রুত আগুন ধরে যেতে পারে তাদেরকে দাহ্য পদার্থ বলে।
১৯। তেজস্ক্রিয় পদার্থ কাকে বলে?
যেসব পদার্থ থেকে ক্ষতিকারক রশ্মি বের হয়, যা ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে বা একজনকে বিকলাঙ্গ করে দিয়ে পারে তাকে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বলে।
২০। বিষাক্ত পদার্থ কাকে বলে?
যেসব পদার্থ শরীরে লাগলে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে শরীরের নানা ধরনের ক্ষতি হয় তাকে বিষাক্ত পদার্থ বলে।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন
উক্ত অনুচ্ছেদর পরিপেক্ষিতে ৪টি সারাংশ দেওয়া হল:
১। প্রশ্ন পা গহনা তৈরিতে ব্যবহৃত স্বর্ণ একটি সংকর ধাতু – ব্যাখ্যা কর।
গহনা তৈরিতে সাধারণত বিশুদ্ধ সোনার সাথে অন্য ধাতু যেমন তামা, নিকেল বা রূপা মিশিয়ে একটি সংকর ধাতু তৈরি করা হয়। এই সংকর ধাতুকেই আমরা গহনা তৈরিতে ব্যবহার করি। সংকর ধাতু তৈরির ফলে সোনা আরও শক্তিশালী, টেকসই এবং বিভিন্ন রঙের হয়ে ওঠে। তাই গহনা তৈরিতে ব্যবহৃত স্বর্ণ আসলে একটি সংকর ধাতু।
২। ব্রোঞ্জকে কেন সংকর ধাতু বলা হয়? ব্যাখ্যা কর।
দুই বা ততোধিক ভিন্ন প্রকৃতির ধাতুকে গলিয়ে নতুন যে ধাতু তৈরি করা হয় তাকে বলে সংকর ধাতু। ব্রোঞ্জ একটি সংকর ধাতু। কারণ কপার (Cu) ও টিন (Sn) কে গলিয়ে তরলে পরিণত করে। এ তরলদ্বয়কে একত্রে মিশিয়ে অতঃপর মিশ্রণকে ঠান্ডা করে কঠিন সংকর ধাতু ব্রোঞ্জ তৈরি করা হয়। তাই বলা যায়, ব্রোঞ্জ একটি সংকর ধাতু
৩। পেঁপে পাকলে হলুদ হয় কেন?
কাঁচা পেঁপে ক্লোরোফিল উপস্থিত থাকায় সবুজ বর্ণের হয়। কিন্তু পেঁপে যখন পেকে যায়, তখন ক্লোরোফিল জীব রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে জ্যান্থোফিলে, রূপান্তরিত হয়। এ কারণে পেঁপে পাকলে হলুদ হয়।
৪। আম পাকলে হলুদ হয় কেন?
রং এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। অধিকাংশ ফল পাকলে এর মধ্যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় হলুদ বর্ণধারী নতুন যৌগের সৃষ্টি হয়। এজন্য আম পাকলে হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
৫। কাঁচা ফল টক হয় কেন?
কাঁচা ফলে বিভিন্ন প্রকার জৈব এসিড যেমন- এসিটিক এসিড, ফরমিক এসিড, টারটারিক এসিড, অ্যাসকরবিক এসিড প্রভৃতি বিদ্যমান থাকে। কোনো কোনো ফলে সামান্য পরিমাণ অজৈব এসিডও থাকে। কাঁচা ফলে এসিড বিদ্যমান থাকায় এর pH মান কম। হয় এবং এসিডিটি বৃদ্ধি পায়। এসিড সাধারণত টক স্বাদযুক্ত। তাই কাঁচা ফল টক হয়।
৬। কাঁচা আম টক কিন্তু পাকা আম মিষ্টি কেন?
কাঁচা আমে বিভিন্ন ধরনের জৈব এসিড থাকে যেমন-সাক্সিনিক এসিড, ম্যালেয়িক এসিড প্রভৃতি। ফলে কাঁচা আম টক হয়। কিন্তু কাঁচা আম যখন পাকে তখন এই এসিডগুলোর রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের সৃষ্টি হয়। তাই পাকা আম মিষ্টি হয়।
৭। এন্টাসিড জাতীয় ঔষুধ কীভাবে কাজ করে- ব্যাখ্যা কর
মানুষের শরীরের বিপাক ক্রিয়ায় সৃষ্ট অতিরিক্ত HCI কে প্রশমিত করার জন্য এন্টাসিড জাতীয় ওষুধ খাওয়া হয়। এন্টাসিড হচ্ছে Mg(OH)₂ ও Al(OH)3, এর মিশ্রণ। এই ক্ষারক দুটি অতিরিক্ত HCI কে প্রশমিত করে এবং রোগী এসিডিটি থেকে মুক্তি পান। এন্টাসিডের বিক্রিয়া নিম্নরূপ-
2HCl + Mg(OH)2 → MgCl2 + 2H2O
3HCl + Al(OH)3 → AlCl3 + 3H2O
৮। এন্টাসিড ওষুধ খেতে হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
পেটে এসিডিটি হলে এন্টাসিড খেতে হয়। গ্যাস্ট্রিক বা অম্লরোগে ডাক্তার এন্টাসিড খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ পাকস্থলি থেকে অতিরিক্ত HCI ক্ষরিত হলে গ্যাস্ট্রিক বা অম্লরোগ হয়। তখন এই ক্ষরিত HCI এসিডকে প্রশমিত করতে ডাক্তারগণ ক্ষারধর্মী এন্টাসিড [Mg(OH)2 বা Al(OH)2] খাওয়ার পরামর্শ দেন।
৯। CO2 গ্যাসটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ব্যাখ্যা কর।
জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে বায়ুমণ্ডলে CO₂ গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবী থেকে বিকিরিত তাপকে এ CO₂ গ্যাস ধরে রাখে। এভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পৃথিবীর নিম্নাঞ্চল সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। তাই CO₂ গ্যাসটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
১০। বায়ুমন্ডলে CO₂ বৃদ্ধি পায় কেন?
মানুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্বালানি হিসেবে কেরোসিন, প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেল ব্যবহার করে থাকে। এসব জ্বালানি ব্যবহারের ফলে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি হয়। এছাড়া চুলোয় রান্না করার সময় কাঠ বা প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড তৈরি হয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
১১। সালোকসংশ্লেষণ বিক্রিয়া কী? সমীকরণসহ ব্যাখ্যা কর।
উদ্ভিদ বাতাস থেকে CO₂ এবং মূল দিয়ে পানি শোষণ করে সূর্যালোকের উপস্থিতিতে সবুজ অংশের ক্লোরোফিলের সাহায্যে এই H₂O ও CO₂ এর মধ্যে রাসায়নিক সংযোগ ঘটিয়ে গ্লুকোজ প্রস্তুত করে। এ প্রক্রিয়াটি সালোকসংশ্লেষণ নামে পরিচিত, যা একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া।
১২। ভিনেগার কীভাবে আচারকে সংরক্ষণ করে?
আচার সংরক্ষণের জন্য ভিনেগার বা সিরকা ব্যবহার করা হয়। আচার পচে যাওয়ার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া'। ভিনেগারের ইথানয়িক এসিডের H+ আয়ন ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন ও ফ্যাটকে আর্দ্রবিশ্লেষিত করে। ফলে ব্যাকটেরিয়া মরে যায়। এতে করে আচার পচনের হাত থেকে রক্ষা পায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আমাদের নিবন্ধগুলিতে মন্তব্য করার সময় দয়া করে শ্রদ্ধাশীল এবং গঠনমূলক হন। অনুপযুক্ত, আপত্তিকর, বা অফ-টপিক মন্তব্য মুছে ফেলা হবে। আসুন ABC আইডিয়াল স্কুলের সকল পাঠকদের জন্য একটি ইতিবাচক এবং শিক্ষামূলক পরিবেশ বজায় রাখি। আপনার সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ!