ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত এলাকার জনজীবন সম্পর্কে প্রতিবেদন | JSC, SSC, HSC

ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত এলাকার জনজীবন


আলোচ্য বিষয়:

👉🏻ঘূর্ণিঝড় - উপদ্রুত একটি এলাকার বিপর্যস্ত জনজীবন সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।
👉🏻সম্প্রতি তোমার এলাকায় মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে । এতে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে । ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত জনগণের দুঃখ - কষ্টের বর্ণনা দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের একটি সংবাদ প্রতিবেদন রচনা করো ।


মুহূর্তের প্রলয়ে বিধ্বস্ত একটি জনপদের বিপর্যস্ত মানুষের আহাজারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত মঙ্গলবার বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানা সদর ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ এখন চরমে । পর্যাপ্ত ত্রাণ সাহায্য ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের অভাবে এ বর্ষা মৌসুমে লোকজনকে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে ।

সরেজমিন পরিদর্শনে দুর্গত মানবতার এক ভয়াবহ দৃশ্য অবলোকন করা গেছে । আশ্রয়হীন মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে । গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই ঘূর্ণিঝড়ের করাল থাবা নেমে আসে । আকাশে তেমন মেঘ ছিল না , নিম্নচাপেরও কোনো লক্ষণ বুঝা যাচ্ছিল না । দিনান্তে মানুষ যখন একটি শান্ত রাতের প্রত্যাশা করছিল তখন উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী এক তীব্র দমকা বাতাস সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায় । থানা সদর ও আশপাশের কয়েকটি গ্রাম কয়েক মিনিট স্থায়ী ঘূর্ণিঝড়ে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বত হয়ে গেছে । মাত্র কয়েক মাইল ব্যাসের এক প্রচণ্ড নিম্নচাপে এলাকাটিতে কেয়ামতের ঘনঘটা নেমে এসেছিল বলে অনেকের মন্তব্য ।

আকস্মিক এ ঘূর্ণিঝড়ে মুহূর্তের মধ্যে বাড়িঘর , গাছপালা দুমড়ে - মুচড়ে উড়ে যায় । শতকরা ৮০ ভাগ টিনের ঘরের চালা খুঁজে পাওয়া যাবে না । বড় বড় গাছগুলো উপড়ে পড়েছে । ধসে পড়েছে কাঁচা বাড়ি - ঘরের দেওয়াল । থানা সদরে পাকা স্কুল ঘরের একাংশ বিধ্বস্ত হয়েছে । নদীতীরে বসবাসকারী বেদেদের নৌকাগুলো নিখোঁজ রয়েছে । অন্তত তিনশ বেদেসহ ঘূর্ণিঝড়ে ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে । ঘরের নিচে চাপা পড়ে , টিন ও উড়ন্ত বস্তুর আঘাতে অসংখ্য লোক আহত হয়েছে । থানা সদরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিল ধারণের ঠাঁই নেই । হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে , আহতদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক । ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে ।

ঘরবাড়ি হারানো মানুষ এখন রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছে । কেউ কেউ বিধ্বস্ত বাড়িতেই কোনোমতে অবস্থান করছে । বৃষ্টির সময় এসব দুর্গত মানুষের দুর্ভোগের শেষ থাকে না । ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক , স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লোকজন এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন । স্থানীয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল , কাপড় , শুকনো খাবারসহ বেশকিছু ত্রাণসামগ্রী বরাদ্দ করা হয়েছে । ইতোমধ্যে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে চারটি মেডিক্যাল টিম এলাকায় পাঠানো হয়েছে । এদিকে কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্ট থেকে সামরিক বাহিনীর একটি মেডিক্যাল টিমও আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছে ।